সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি হলেও দ্রুত ছড়াচ্ছে পানিবাহিত রোগ। জ্বর, ডায়রিয়া, সাপের দংশন ও চর্মরোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বন্যাকবলিত সিলেটের লোকজন। গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেট বিভাগে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৫০৭ জন। এ নিয়ে চলমান বন্যার কারণে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত মোট ৯ হাজার ৮৬৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের ‘হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম’সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, এ পর্যন্ত পানিবাহিত রোগে সিলেট বিভাগে ৯ হাজার ৮৬৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ২ হাজার ৮৪৭, সুনামগঞ্জে ১ হাজার ৭৭৮, হবিগঞ্জে ৩ হাজার ৩৪ ও মৌলভীবাজারে ২ হাজার ২৩৬ জন। তারা জ্বর-সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া, সাপের দংশন, চোখের প্রদাহ ও চর্মরোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হন। তবে এর মধ্যে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাই ছিল বেশি।
সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেট বিভাগে ৫০৭ জন ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ৫৪, সুনামগঞ্জে ১০০, হবিগঞ্জে ২৩১ ও মৌলভীবাজারে ১২২ জন।
এদিকে, পানিতে ডুবে ও বন্যার কারণে বিভিন্নভাবে সিলেট বিভাগে এ পর্যন্ত ৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ১৮, সুনামগঞ্জে ২৮, হবিগঞ্জে ৫ ও মৌলভীবাজারে ৮ জন।
তবে পানিবাহিত রোগ-বালাই যাতে সিলেটকে কাবু করতে না পারে, সে লক্ষ্যে কাজ করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। স্বাস্থ্য বিভাগের ৪২৯টি টিম কাজ করছে বিভাগজুড়ে।
এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. মোহাম্মদ নূরে আলম শামীম। তিনি বলেন, পানিবাহিত রোগ-বালাই সিলেটে যাতে ছড়াতে না পারে- সেজন্য বিভাগজুড়ে ৪২৯টি টিম কাজ করছে। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ১৪০, সুনামগঞ্জে ১২৩, হবিগঞ্জে ৯২ ও মৌলভীবাজারে ৭৪টি।
উল্লেখ্য, গত ১৫ জুন সিলেটে দ্বিতীয় দফা বন্যা হানা দেয়। এক সপ্তাহের মধ্যে ডুবে যায় শহর ও গ্রামের ৯০ ভাগ এলাকা। স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে সিলেট। এক সপ্তাহ পর থেকে বন্যার পানি কমতে শুরু করে কয়েকদিন পর ফের বাড়তে থাকে। ফলে দীর্ঘমেয়াদি বন্যার কবলে পড়েন সিলেটবাসী। এ অবস্থায় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দেয়। বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে বিদ্যুৎব্যবস্থা।