Durnitibarta.com
ঢাকামঙ্গলবার , ১৪ নভেম্বর ২০২৩
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৮টার ডাক্তার কয়টায় আসে ?

প্রতিবেদক
বার্তা বিভাগ
নভেম্বর ১৪, ২০২৩ ৩:০৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি।। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বর্হিবিভাগের ডাক্তার ৮টায় আসার কথা থাকলেও আসে কয়টায়? নিজেদের ইচ্ছে অনুযায়ী সময়ে তারা হাসপাতালে আসছেন। সরকারী নিয়মের নেই কোন বালাই তাদের কাছে। তারা সরকারের চাকুরি করবে কিন্তু সরকারের দেয়া নিয়ম মানতে নারাজ। এতে ঘন্টার পর ঘন্টা ডাক্তারের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে রোগীদের। প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে শত শত রোগী আসে সুচিকিৎসার আশায়। কিন্তু চিকিৎসার বদলে ভোগান্তি বেশি পোহাতে হচ্ছে তাদের।

জানা যায়, সরকারি হাসপাতাল গুলোতে ডাক্তার আসার সময় সূচি শুরু হয় সকাল ৮টা থেকে। সরকারি হাসপাতাল বলে ডাক্তারের আসা যাওয়ার কোনো রুটিন নেই বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ জনগন। টিকেটের দীর্ঘ লাইনে ঘন্টাখানেক দাঁড়িয়ে থাকার পর আবারও ডাক্তার রুমের সামনে গিয়ে ডাক্তার আসার অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায় রোগীদের। কখনো কখনো বেলা ১১.০০ বাজলেও ডাক্তার শূণ্য থাকে কয়েকটি কক্ষ।

সোমবার (১৩ নভেম্বর) সরজমিন দেখা যায়, হাসপাতালের বোর্ডে লিখা রয়েছে অফিস সময়সূচি “সরকারী ও সাপ্তাহিক ছুটির দিন ব্যাতিত সকাল ৮টা হইতে দুপুর ২.৩০ মিনিট পর্যন্ত, জরুরী বিভাগ সার্বক্ষনিক খোলা”। কিন্তু সকাল ৮.৪০ মিনিটে ঈশ^রগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে বর্হিবিভাগের টিকিট কাউন্টারে টিকিট বিক্রেতা ও ডাক্তারের দরজার সামনে বেশ কয়েকজন রোগী বসে আছে। কিন্তু একজন ডাক্তারও এ সময় হাসপাতাল আসেনি। টিকিট কাউন্টারে ডাক্তার আসার সময় জানতে চাইলে তিনি জানান, “ডাক্তার আসবে সকাল ১০টায়”।

এসময় সাংবাদিকের উপস্থিতির বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানায় টিকিট কাউন্টারের এনায়েতুল্লাহ। পরে দেখা যায় সকাল ৯.৪৯ মিনিটে দুজন ডাক্তার তাড়াহুড়া করে ২২ নম্বর কক্ষে প্রবেশ করে। পরে ৯.৫৪ মিনিটে ১৬ নম্বর ও একই সময়ে ১২ নম্বর কক্ষে আরও দুজন প্রবেশ করেন। এসময় ১২ নম্বর কক্ষে ডেন্টাল কনসালট্যান্টকে না পেয়ে টেকনোলজিষ্ট মাসুদ এর কাছে দেরী করে আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন “এ বিষয়টা কর্তৃপক্ষ ভাল বলতে পারবেন”।

এর আগে চিকিৎসা নিতে আসা অনেকে জানান, বাড়ির আশেপাশে সরকারি হাসপাতালটি থাকার কারণে এবং নিজের সুবিধার্থে আমরা এখানেই ডাক্তার দেখাতে আসি। এখানে আসি রোগ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য কিন্তু আরো রোগ নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়। এমনিতে তো ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয় টিকেটের জন্য। তার উপরে আবার ডাক্তারের জন্যও অপেক্ষা করতে হয়। সরকারি হাসপাতাল বলে কোনো নিয়ম নেই। ডাক্তাদের যার যেমন সময়ে ইচ্ছে হচ্ছে আসছে আবার যেমন ইচ্ছে চলে যাচ্ছে। পর্যাপ্ত পরিমানের তদারকি নেই বলেই সরকারি হাসপাতালে এসব সম্ভব।

উপজেলার জাটিয়া ইউনিয়নের বিজয়পুর গ্রাম থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রাশিদ (৫৬) নামে এক রোগী বলেন, ৮.৩০ মিনিট থেকে ডাক্তারের রুমের সামনে এসে বসে আছি। অনেক দুর থেকে এসে এভাবে লাইন ধরে বসে আছি ডাক্তারের জন্য। এখন প্রায় ১০টা বাজে কিন্তু এখনো ডাক্তার আসার নাম নেই।

সোহাগী ইউনিয়নের সাহেবনগর গ্রামের হুসনেহা (৬০) জানান, আমি বুড়া মানুষ, সকাল ৮টা থাইক্যা বইয়া রইছি, অহনো ডাক্তর আইয়ে না। পার্শ্ববর্তী উপজেলা গৌরীপুর এর নগুয়া গ্রাম থেকে চিকিৎসা নিতে আসা মালেহা (৭০) জানান, অত দোড়া থাইকা ২ দিন ধইরা আইতাছি । আইয়া বইয়া তাহি ডাক্তরের লাই¹েয়া। কাইল আইছিলাম দিছে ফরিক্কা (টেষ্ট), আজগোয়া আবার আইছি। ২ গণ্টা ধইরা বইয়া রইছি ডাক্তর আইয়ে না।

এ বিষয়ে ঈশ^রগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লোপা চৌধুরী বলেন, আসলে এ বিষয়টি এলাকার প্রভাবে এমন হয়েছে। সকাল ৮ টায় ডাক্তার আসার নিয়ম থাকলেও এ এলাকার রোগীরাইতো এতো সকালে আসে না। তবে ডাক্তারদের সময়মত না আসাটা ঠিক নয়। নিয়ম মেনেই চলা উচিৎ। বিষয়টি নিয়ে আমি ডাক্তারদের সাথে আলোচনা করে দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করবো।