বিশেষ প্রতিনিধি: ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক থেকে ১১ ব্যাগ রক্ত বাইরে পাচারের সময় সোনিয়া আক্তার শান্তা নামে এক বেসরকারি কর্মচারীকে আটক করা হয়েছে। গতকাল বিকেলে হাসপাতালের স্টাফ ও চিকিৎসকদের সহায়তায় তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলা হয়। আটককৃত সোনিয়া সৌদি সিকিউরিটি সার্ভিসের মাধ্যমে ব্লাড ব্যাংকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত ছিলেন। তার স্থায়ী ঠিকানা ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায়।
সূত্র জানিয়েছে, প্রথমদিকে ঘটনাটি গোপন রাখার চেষ্টা করেছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে খবর ছড়িয়ে পড়লে, হাসপাতালের পরিচালক আটককৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদে সোনিয়া আক্তার শান্তা নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকারের পাশাপাশি জানান, ব্লাড ব্যাংকের কাউন্টারে কর্মরত সরকারি স্টাফ সোহেলসহ আরও কয়েকজন কর্মচারীও এই চক্রের সঙ্গে জড়িত।
তবে সরকারি স্টাফদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিললেও, তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বরং শুধুমাত্র সোনিয়া আক্তার শান্তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে ঘটনাটির ইতি টানার চেষ্টা চালানো হয়।
এর আগে, প্রায় দুই মাস আগে একই হাসপাতালে ব্লাড চুরির ঘটনায় কোতোয়ালি থানা পুলিশ দুই বহিরাগতকে গ্রেপ্তার করেছিল। এরপরও একই ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি হাসপাতাল প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপের অভাবকে স্পষ্ট করে তুলেছে।
বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সংগঠন হাসপাতালের ভেতরের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং অভিযোগ রয়েছে, প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের ছত্রছায়ায় দুর্নীতিবাজদের রক্ষার চেষ্টা করা হয়েছে।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে রক্ত চুরির এই সাম্প্রতিক ঘটনা হাসপাতালের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা এবং অব্যবস্থাপনার নগ্ন চিত্র উন্মোচন করেছে। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরেই অভ্যন্তরীণ অসাধু স্টাফদের সহযোগিতায় সোনিয়া আক্তার শান্তা রক্ত চুরির কাজে জড়িত ছিলেন। সংশ্লিষ্ট মহল দ্রুত ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।
