খাইরুল ইসলাম আল আমিন: পাঁচ বছরের শিশু মোসাব্বির। এই বয়সে তার মাঠে-ঘুরে বেড়ানোর কথা ছিল। কিন্তু শারীরিক প্রতিবন্ধিতা ছোট্ট শিশু মেসাব্বিরের সব সময় কেড়ে নিয়েছে। বাবা-মা আর আত্মীয় স্বজনের কোলে চড়ে চলাফেরা করতে হয় শিশুটিকে। জন্মের পর থেকেই চলাফেরায় অক্ষম মোসাব্বির। বাবা মায়ের কোলে চড়ে কিছুক্ষণ থাকলেও বাকী সময় তাকে শুয়ে থাকতে হয়। অভাব-অনটনের সংসারে ছেলেকে একটি হুইল চেয়ার কিনে দেওয়ার মতো সামর্থ্য নেই পরিবারটির।
মেসাব্বিরের বাবা ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার বোকাইনগর ইউনিয়নের দরিদ্র কৃষক মো. রায়হানের ক্ষুদ্র উপার্জনে সংসার চলে টেনেটুনে। ফলে শিশুপুত্রকে একটি হুইল চেয়ার কিনে দেয়ার মতো সামর্থ্য তার নেই। বিভিন্নজনের কাছে একটি হুইল চেয়ার সহযোগিতা চেয়েও মিলেনি। শারীরিক অক্ষমতা শিশুটিকে ঠেলে দিয়েছে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতে দিকে।
জানা যায়, প্রতিবন্ধী শিশু মেসাব্বিরের জন্য একটি হুইল চেয়ারের আকুতি জানিয়ে আব্দুল্লাহ নামক এক ব্যাক্তি পোষ্ট করেন অনলাইন ভিত্তিক সামাজিক সংগঠন “ঈশ্বরগঞ্জ পরিবার” নামক ফেসবুক গ্রুপে। বিষয়টি গ্রুপের এডমিন, মডারেটর প্যানেলের চোখে পড়ে। এরপর তারা চেষ্টায় লেগে যায় কিভাবে প্রতিবন্ধী শিশু মেসাব্বিরের মুখে হাসি ফোটানো যায়। অল্প সময়ের মধ্যেই “ঈশ্বরগঞ্জ পরিবার” গ্রুপের এডমিন, মডারেট ও শুভাকাঙ্খিদের সহায়তায় মোসাব্বিরকে একটি হুইলচেয়ার কিনে দেয় । আর এই চেয়ার পেয়ে পুরো পরিবারের মুখে স্বস্তির হাসি ফুটে ওঠেছে।
এ ব্যাপারে মোসাব্বিরের বাবা মো. রায়হান বলেন, বসতবাড়ি ছাড়া তাদের কোনো সম্পদ নেই। তিনি মানুষের জমি আধি নিয়ে চাষাবাদ করে কোন রকমে সংসার চালায়। দীর্ঘদিন ধরে একটি হুইল চেয়ারের অভাবে সারাদিন তার ছেলেকে শুয়ে থাকতে হতো। এখন চেয়ার পেয়ে তারা অনেক খুশি।
ঈশ্বরগঞ্জ পরিবারের মডারেট ও উপজেলা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ ইসহাক বলেন, স্বেচ্ছাসেবী এ সংস্থাটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সামাজিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। যেমন, বৃক্ষরোপণ, ঘর প্রদান, টিউবওয়েল প্রদান, অসুস্থ রোগীদের অনুদান, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ প্রদান ও সপ্তাহে একদিন একটি অসহায় পরিবারকে এক সপ্তাহের বাজার প্রদান অন্যতম। সর্বশেষ আমরা শারীরিক প্রতিবন্ধীদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ করেছি। এ কার্যক্রম ভবিষতেও অব্যহত থাকবে।
ঈশ্বরগঞ্জ পরিবারের এডমিন রাজিব আলামিন বলেন, যারা এই হুইল চেয়ার প্রদানে সহযোগিতা করেছেন ওই অসহায় পরিবারের পক্ষ থেকে ও “ঈশ্বরগঞ্জ পরিবার” এর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।