Durnitibarta.com
ঢাকামঙ্গলবার , ৮ অক্টোবর ২০২৪
আজকের সর্বশেষ সবখবর

শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও কমেনি দুর্ভোগ

প্রতিবেদক
Mym Office
অক্টোবর ৮, ২০২৪ ৪:০৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

বার্তা ডেস্ক: টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরে সৃষ্ট বন্যার সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। জেলার চারটি পাহাড়ি নদীর পানি আরও কমেছে। এসব নদীর পানি এখন বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ব্রহ্মপুত্র, দশানী ও মৃগী নদীতে। পানি বৃদ্ধি পেলেও এসব নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা, উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, রোববার দুপুরের পর থেকে শেরপুরে বৃষ্টি হয়নি। এ ছাড়া মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর পানি অনেকটাই কমেছে। এর ফলে সোমবার ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী, শেরপুর সদর ও নকলা উপজেলার ২০টি ইউনিয়নে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এসব ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম থেকে বন্যার পানি ধীরে ধীরে নিম্নাঞ্চলে নেমে যাচ্ছে। বর্তমানে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী। তবে নকলা উপজেলার ধনাকুশা উচ্চবিদ্যালয় ও তারাকান্দা দাখিল মাদ্রাসা বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে এখনো মানুষ অবস্থান করছে। এদিকে বন্যার কারণে জেলার নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও নকলায় এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৯ জন।

পাউবোর শেরপুর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল ৯ টায় শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জেলার ভোগাই নদীর পানি ১৩৮ সেন্টিমিটার, চেল্লাখালী নদীর পানি ৭৭ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়াও অপর দুটি পাহাড়ি নদী মহারশি ও সোমেশ্বরীর পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। তবে জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও কমেনি দুর্ভোগ। এখনও প্রতিটি এলাকায় খাদ্য সংকট রয়েছে।

ঝিনাইগাতী উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. জাহিদুল হক বলেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও বন্যাকবলিত মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। এখনো দুর্গম এলাকায় মানুষের খাদ্যসংকট আছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। বিএনপি, জামায়াতসহ রাজনৈতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল।এদিকে বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে বেহাল গ্রামীণ সড়কের চিত্র ভেসে উঠছে। ঝিনাইগাতী উপজেলার ঝিনাইগাতী-ফাকরাবাদ সড়কের বিভিন্ন অংশ ঢলের পানিতে ভেঙে যাওয়ায় ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে।

জেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, এ পর্যন্ত জেলার ৩৫ হাজার ৫শ হেক্টর জমির আমন ধানের আবাদ ও ১ হাজার হক্টর জমির সবজির আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কমপক্ষে ৭০ হাজার কৃষক।

জেলা মৎস্য বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে, শুধু ঝিনাইগাতী এবং নালিতাবাড়ী উপজেলায় ২ হাজার ৫৭টি মাছের ঘের ভেসে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ প্রাথমিক হিসাবে ১১ কোটি টাকা।

পাউবো শেরপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নকীবুজ্জামান বলেন, নদণ্ডনদীর পানি দ্রুত হ্রাস পাঁচ্ছে। বৃষ্টি না হলে বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে বলে আশা করা যায়।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা সব জায়গায় ত্রাণ কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা করছি। আমাদের এ কাজে সেনাবাহিনী সার্বিক সহযোগিতা করছে। পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, ব্যবসায়ীসহ সবাই এগিয়ে এসেছেন। সবাই মিলে আমরা এ দুর্ভোগ মোকাবিলা করতে সক্ষম হবো।’