Durnitibarta.com
ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৯ মার্চ ২০২৩
আজকের সর্বশেষ সবখবর

দেশে সাড়ে ৫ কোটি নারী জরায়ু ক্যানসারের ঝুঁকিতে

প্রতিবেদক
Khairul Islam Alamin
মার্চ ৯, ২০২৩ ২:২১ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

বার্তা ডেস্ক:

বিশ্বব্যাপী জরায়ুমুখ ক্যানসারের প্রবণতা কমলেও বাংলাদেশে নারীদের ক্যানসারের মধ্যে জরায়ু ক্যানসার দ্বিতীয় স্থানে আছে। গ্লোবোকন ২০২০–এর তথ্যমতে, প্রতি বছর ৮ হাজার ৬৮ জন নারীর জরায়ু ক্যানসার শনাক্ত হয় এবং ৫ হাজার ২১৪ জনের প্রতি বছর মৃত্যু হয়। বাংলাদেশে ১৫ বছরের বেশি বয়সী প্রায় ৫ কোটি ৪০ লাখ নারী জরায়ুর ক্যানসার ঝুঁকির মধ্যে আছে।

রবিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এ-ব্লক মিলনায়তনে সেন্ট্রাল সেমিনার সাব কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সার্ভিক্যাল বা জরায়ুমুখের ক্যানসার বিষয়ক সেমিনারের এসব তথ্য জানানো হয়।

সেমিনারে বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অবস অ্যান্ড গাইনি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক চিকিৎসক ফারজানা শারমিন তাঁর ‘ইভালুয়েশন অব পোস্ট মেনোপজাল ব্লিডিং’ প্রবন্ধে উল্লেখ করেন, নারীদের মাসিক বন্ধ হওয়ার পরও রক্তক্ষরণ হলে তাঁকে পোস্ট মেনোপজাল ব্লিডিং বলে। এটা নারী স্বাস্থ্যের জন্য একটি ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়। সাধারণত ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে এই রক্তক্ষরণের কারণটা স্বাভাবিক। কিন্তু ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে এটা জরায়ুর ক্যানসারের জন্য হয়ে থাকে। তাই প্রত্যেক নারী মাসিক বন্ধ হওয়ার পরও এ রকম রক্তক্ষরণ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো পরীক্ষা নিরীক্ষা ও চিকিৎসা নেওয়া উচিত।

নারীদের জরায়ুর ক্যানসার জটিলতা বা সমস্যা সৃষ্টির আগেই ধরা পড়লে প্রতিরোধ করা সম্ভব। সেমিনারে বক্তারা বলেন, বাল্যবিবাহ, কম বয়সে বাচ্চা নেওয়া, দুই বা তিনের অধিক বাচ্চা নেওয়া, ধূমপান ইত্যাদি জরায়ু মুখের ক্যানসারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। জরায়ু ক্যানসারের প্রধান লক্ষণ হলো অনিয়মিত রক্তস্রাব, সহবাসে রক্ত যাওয়া, অতিরিক্ত সাদা স্রাব, গন্ধযুক্ত সাদা স্রাব যাওয়া ইত্যাদি।

বক্তারা বলেন, জরায়ুর ক্যানসারে চিকিৎসা নির্ভর করে কোন পর্যায়ে রোগটি শনাক্ত হয়েছে। প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত হলে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চিকিৎসা করা যায় এবং ৪র্থ পর্যায়ের জরায়ুর ক্যানসার রেডিওথেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা করা যায়। কিন্তু দেশে জরায়ুর ক্যানসারের অস্ত্রোপচার করার জন্য গাইনি অনকোলোজি বিশেষজ্ঞ আরও প্রয়োজন এবং রেডিওথেরাপি মেশিনও আরও বেশি দরকার। তাই ক্যানসার হওয়ার আগেই এই রোগ ক্যানসার পূর্ববর্তী অবস্থায় শনাক্ত করতে পারলে সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া সম্ভব।

চিকিৎসক মনোয়ারা বেগম জরায়ু মুখে ক্যানসার শনাক্তকরণ ও প্রতিকার বিষয়ে বলেন, জরায়ুমুখ ক্যানসার সম্পূর্ণ প্রতিরোধ করা যায়। ক্যানসার শনাক্তকরণ পরীক্ষায় মাধ্যমে যেহেতু দেশে জরায়ু মুখ ক্যানসার দ্বিতীয় অবস্থানে আছে তাই জরায়ু মুখ ক্যানসার শনাক্তকরণের জন্য ৩০ বছরের ঊর্ধ্বে সবাইকে সচেতন করতে হবে এবং ভায়া পরীক্ষা করার মাধ্যমে জরায়ু মুখ ক্যানসার শনাক্ত করা যায় তা জানাতে হবে। ভায়া ছাড়াও এইচপিভি ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে এই ক্যানসার চিহ্নিত করা যায়। জরায়ু ক্যানসার প্রতিরোধে সব মেয়েদের (৯-১৪ বছরের মধ্যে) এইচপিভি ভ্যাকসিন দিতে হবে এবং বাল্য বিবাহ বন্ধ করতে হবে এবং দুইয়ের অধিক সন্তান নিতে নিষেধ করতে হবে।

সেমিনারের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক চিকিৎসক মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক চিকিৎসক একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক চিকিৎসক মো. মনিরুজ্জামান খান প্রমুখ।