বিশেষ প্রতিনিধি: কথায় আছে ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’ যার অর্থ দাড়ায় যন্ত্রণার উপর যন্ত্রণা দেয়া । একেতো মিথ্যা মামলায় রয়েছে জেল হাজতে, তার উপর আবার তারই ১ একর জমির বাড়ন্ত শিমগাছ উপড়ে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। এ বর্বরোচিত ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার রাজিবপুর ইউনিয়নের ভাটিচর নওপাড়া গ্রামে। এব্যাপারে বৃহস্পতিবার ঈশ্বরগঞ্জ থানায় ৫জনের নাম উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলামের স্ত্রী পারুমা খাতুন।
ক্ষেত মালিক মিথ্যা মামলায় জেল হাজতে। অনাগত অভাবের চিন্তায় গৃহবধূ পারুমা খাতুন এখন দিশেহারা। তিনি অপরাধীদের গ্রেফতার পূর্বক ক্ষতিপূরণ আদায় ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বিস্তৃর্ণ মাঠ জুড়ে চাষ করা হয়েছে বারি-২ জাতের শিম। সে মাঠে শুধু কৃষক রফিকুল ইসলামের ১একর জমির শিম গাছ গুলো উপরে ফেলে দেয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট করে শিম গাছ উপড়ানোর ব্যাপারে এলাকাবাসীর সন্দেহের তীর মামলার প্রতিপক্ষের দিকেই। এলাকার শতশত মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত শিম ক্ষেত পরিদর্শন করতে এসে তাদের মন্তব্যে এমনটিই প্রতিফলিত হয়।
স্থানীয় এলাকাবাসী ইন্নছ আলী (৭০) জানান, জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আক্কাস আলী ও রুস্তুম আলী দুই ভাইয়ের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধের জেরে আক্কাস আলীএকটি মামলা করে। এই মামলায় জড়িয়ে দেয় প্রতিবেশী রফিকুল ইসলামকে। যার ফলে গত দুই সপ্তাহ ধরে রফিকুল ইসলাম জেল হাজতে আছেন। এসুযোগে দুর্বৃত্তরা গত বুধবার রাতে এই পাশবিক ঘটনাটি ঘটায়। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের স্ত্রী পারুমা খাতুনের ধারণা আক্কাস আলী ও তার লোকজন ছাড়া গ্রামে এমন সর্বনাশ করার মত কেউ নেই।
কৃষক জালাল উদ্দিন জানান, শিম গাছ গুলো খুঁটি বেয়ে বেড়ে উঠছে। এখন ছিল মাচায় উঠার পালা। মাচায় উঠানোর ১৫ দিনের মাঝে ফুল ও একমাসের মাঝে পরিপক্ক শিম বাজার জাত করা সম্ভব হত। প্রতি কাঠা শিম ক্ষেত থেকে পনের দিন অন্তর অন্তর ৫ থেকে ৬মন শিম উত্তোলন করা যেত। এ শিম ক্ষেতগুলো ঘিরে সারা বছরের অর্থ উপার্জনের স্বপ্ন ছিল এই কৃষক পরিবারের। এক রাতেই সেই স্বপ্ন গুড়িয়ে দিলো দুর্বৃত্তরা। এই শিম ক্ষেত ছাড়া এই পরিবারের আর কোন আয়ের উৎস নেই।
এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রিপা রানী চৌহান জানান, বিষয়টি অত্যান্ত দুঃখজনক ও অমানবিক। সরকারি ভাবে সহায়তা করার কোন সুযোগ থাকলে আমি পরিবারের পাশে থাকার চেষ্টা করবো।
এব্যাপারে ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ওবায়দুর রহমান জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।