বার্তা ডেস্ক: নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় ময়মনসিংহের ২টি সংসদীয় আসনের চার প্রার্থীকে তলব করেছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। প্রার্থীরা হলো- ময়মনসিংহ-১১ (ভালুকা) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ ধনু, ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. হাফেজ রুহুল আমীন মাদানী, একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী এ বিএম আনিসুজ্জান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আমিনুল হক।
নির্বাচনী এলাকা-১৫৬ (ময়মনসিংহ-১১ ভালুকা) ও নির্বাচনী এলাকা-১৫২ (ময়মনসিংহ-৭, ত্রিশাল) আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধানীর কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক সিনিয়র সহকারী জজ পবন চন্দ্র বর্মন ও সিনিয়র সহকারী জজ নাহিদ সুলতানা বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) এই তলব আদেশ দিয়েছেন। সেই সাথে অনুসন্ধান কমিটির কাছে স্ব-শরীরে হাজির হয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
সহকারী জজ পবন চন্দ্র বর্মন এর তলব আদেশে বলা হয়েছে, ‘আপনি কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ ধনু, ময়মনসিংহ-১১ আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত এমপি পদপ্রার্থী ঘোষণার পর গত ২৯/১১/২৩ খ্রি. তারিখ বুধবার ঢাকা থেকে ময়মনসিংহে আগমনের সময় পথিমধ্যে ছাদ খোলা গাড়িতে দাড়িয়ে শুভেচ্ছা জানাতে জানাতে ময়মনসিংহের দিকে আসেন। এসময় ঐ এলাকায় সকল যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তাতে জনগণের চলাচলের পথে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেন। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এর মাধ্যমে আপনি সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮ এর ৬ (ঘ), ৮ (ক), ১০ (ক) এবং ১২ ধারার বিধান লঙ্ঘন করেছেন।’
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘উক্ত আইন ভঙ্গের কারণে কেন আপনার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তদমর্মে নিম্ন স্বাক্ষরকারী (পবন চন্দ্র বর্মন, নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি, নির্বাচনী এলাকা ময়মনসিংহ-১১ এবং সিনিয়র সহকারী জজ আদালত) দপ্তরে আগামী ৩/১২/২০২৩ খ্রি. তারিখ ৩.০০ ঘটিকার সময় স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।’
অপরদিকে, সিনিয়র সহকারী জজ নাহিদ সুলতানা এর তলব আদেশে বলা হয়েছে, ‘আপনি মো. হাফেজ রুহুল আমীন মাদানী, ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত এমপি পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণার পর গত ৩০/১১/২৩ খ্রি. তারিখ আপনার মনোনয়ন দাখিলের সময় আপনার নেতাকর্মীরা আনন্দ মিছিল ও শোভাযাত্রা করে। এসময় ঐ এলাকায় সকল যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তাতে জনগণের চলাচলের পথে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেন। এর মাধ্যমে আপনি সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮ এর ৬ (ঘ), ৮ (ক), ১০ (ক) এবং ১২ ধারার বিধান লঙ্ঘন করেছেন।’
ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনের অপর দুই প্রার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থী এ বিএম আনিসুজ্জান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আমিনুল হককে সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮ এর ৬ (ঘ), ৮ (ক), ১০ (ক) এবং ১২ ধারার বিধান লঙ্ঘন করায় তলব আদেশ করা হয়েছে।
এই আসনের প্রার্থীদের কাছে প্রেরিত তলব চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘উক্ত আইন ভঙ্গের কারণে কেন আপনার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তদমর্মে নিম্ন স্বাক্ষরকারী (নাহিদ সুলতানা নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি, নির্বাচনী এলাকা ময়মনসিংহ-৭ এবং সিনিয়র সহকারী জজ আদালত) দপ্তরে আগামী ৭/১২/২০২৩ খ্রি. তারিখ ৪.০০ ঘটিকার সময় স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।’
উল্লেখ্য, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধিমালায় বলা হয়েছে, কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা এর মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি ভোট গ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিনের তিন সপ্তাহ সময়ের আগে কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচার শুরু করতে পারবেন না। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি। সে হিসাবে ১৫ ডিসেম্বরের আগে কেউই নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারবেন না।