বিশেষ প্রতিনিধি।। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে কাঁচামাটিয়া নদী থেকে সপ্তাহখানেক আগে ১০ মাস বয়সী এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় ইউডি মামলা হয়। কিন্তু গতকাল রোববার নিজের সন্তানকে হত্যার কথা স্বামীসহ ও পরিবারের সদস্যদের জানায় নিহত শিশুর মা। পরে ওই নারীকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন তাঁর স্বামী।
সোমবার ওই নারীকে আদালতে নেওয়া হলে তিনি সন্তানকে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। পরে আদালতের নির্দেশে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
ওই নারীর নাম পপি আক্তার (৩০)। তিনি উপজেলার জাটিয়া ইউনিয়নের হীরাধর এলাকার জিয়াউল হকের স্ত্রী। গত মঙ্গলবার দুপুরে কাঁচামাটিয়া নদী থেকে ওই দম্পতির শিশু সন্তান ছোঁয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ওই দিনই শিশুটিকে দাফন করা হয়।
পরিবার বলছে, সাত বছর আগে জিয়াউল হক ও পপি আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই নানা কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ লেগেই থাকত। এ অবস্থায় বিয়ের ৬ বছর পর তাদের ঘরে মেয়ে শিশুটি জন্ম নেয়। শিশুটির নাম রাখা হয় লাইসা আক্তার ছোঁয়া।
পরিবারের ভাষ্যমতে, ঘটনার দিন ছোঁয়াকে ঘুম পাড়িয়ে পপি আক্তার উঠান ঝাড়ু দিচ্ছিলেন। কিছুক্ষণ পর জিয়াউল হক ঘরে গিয়ে মেয়েকে খাটের ওপর না পেয়ে পরিবারের লোকজনসহ খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে ঘরের পেছনে অন্তত ২৫ থেকে ৩০ ফুট দূরে কাঁচামাটিয়া নদীতে ভাসমান অবস্থায় শিশুটির মরদেহ পাওয়া যায়। পরে স্থানীয়রা খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ বিষয়ে ঘটনার দিন নিহত শিশুর দাদা আবু সিদ্দিক বলেছিলেন, তার নাতনি বসতে শুরু করেছে। ঠিকমতো হামাগুড়িও দিতে পারে না। এ অবস্থায় নদীতে পড়ে যাওয়া কোনোভাবেই সম্ভব না। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে মরদেহ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। একই দাবি জানিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারাও।
এ প্রসঙ্গে নিহত শিশুর বাবা ও পপির আক্তারের স্বামী মো. জিয়াউল হক বলেন, আমার মেয়েটি মারা যাওয়ার পর থেকে আমার স্ত্রীর অস্বাভাবিক আচরণে সন্দেহ হয়। একপর্যায়ে আমার স্ত্রী স্বীকার করে আমার মেয়েকে সে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দিয়েছিল।
শিশুটিকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে জানতে চাইলে জিয়াউল বলেন, আমি এখন মানসিকভাবে খুব বিপর্যস্ত অবস্থায় আছি। আর কথা বলতে চাই না।
এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে হত্যা মামলা রুজু করা হয়েছে। গতকাল রোববার মামলা দায়েরের পর আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ বিকেলে ওই নারীকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে মেয়েকে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর আদালতের নির্দেশে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
প্রকাশকঃ খাইরুল ইসলাম আল আমিন, প্রধান সম্পাদকঃ আবুল খায়ের, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৯৫ পাটবাজার (পুকুরপাড়), ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভা, ঈশ্বরগঞ্জ, ময়মনসিংহ , ওয়েবসাইট-www.durnitibarta.com, মোবাইলঃ 01710-492468, ইমেইল- [email protected]