শেখ মামুনুর রশীদ মামুনঃ নানা অনিয়ম ও ব্যাপক দূর্নীতিতে ছেয়ে গেছে ময়মনসিংহ জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়। লক্ষ লক্ষ টাকার ঘুষ বানিজ্য,নিয়োগ বানিজ্য,সহ নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের কর্মকর্তা- কর্মকচারীদের বিরুদ্ধে! সদর উপজেলা সহ বিভিন্ন এলাকায় ভুয়া কাজির ছড়াছড়ি হওয়ায় অবাধে চলছে বাল্যবিবাহ। অধিক লাভের আশায় এসব ভুয়া কাজিদের পরোক্ষ মদদ দিচ্ছে একটি নিবন্ধনকৃত কাজীদের চক্র। তাদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে প্রকাশ্যে বাল্য বিয়ে পড়াতে সমর্থ হচ্ছে এসব ভূয়া কাজিরা।
ময়মনসিংহ সদর এলাকার ঘাগড়া ইউনিয়নের কাজী আব্দুল্লাহ। তিনি নিজের ইচ্ছেমত নিয়োগ দিয়েছেন একাধিক ভুয়া কাজি! তাদের মধ্যে কাজী আব্দুল্লার দুই ভাই,এবং ঘাগড়ার শাজাহান,ভাবখালীর আরফার মাস্টার, ভাবখালী নারায়নপুরের গিয়াস উদ্দিন কে।জানা গেছে, জেলা রেজিস্ট্রি কার্যালয়ে ঘুষ দিয়ে, পার্শ্ববর্তী ভাবখালী ইউনিয়নে ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত কাজীর দায়িত্ব নেন কাজী আব্দুল্লাহ! দায়িত্ব পাওয়ার পর পরই অধিক লাভের আশায় নিজের ইচ্ছে মত নিয়োগ দিয়েছেন একাধিক ভূয়া কাজি!এসব ভূয়া কাজিদের বেপরোয়া কার্যকলাপে, অপ্রাপ্ত বয়স্কদের বিয়ে পড়ানো হচ্ছে হরহামেশাই।এদিকে ময়মনসিংহ নগরীর কাটগোলা এলাকার কাজি আব্দুল মান্নান এর শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ভূয়া বলে অভিযোগ ওঠেছে! এমনকি ৭০ হাজার টাকা ঘুষের বিনিময়ে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগও রয়েছে, কিন্তু অঙ্ঘাত কারণে কোন ব্যবস্হা নেয়নি জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়। এসব বিষয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে একাধিক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ময়মনসিংহ জেলা কাজী সমিতি।কিন্তু কোন ব্যবস্হা নিতে দেখা যায়নি বলে কাজী সমিতির নেতারা জানান। অনুসন্ধানে জানা গেছে, যেসব ইউনিয়নে কাজি শূন্য,সেসব ইউনিয়নে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ভারপ্রাপ্ত কাজী নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ ওঠেছে জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের বিরুদ্ধে । যা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি স্হানীয়দের।
এ বিষয়ে তদারকির জন্য জেলা রেজিস্ট্রারের উপর দায়িত্ব থাকলেও অজ্ঞাত কারণে জেলা রেজিস্ট্রার কার্যকরী পদক্ষেপ নেয় না বলে অভিযোগ রয়েছে। সূত্র মতে, জেলার সকল সাব রেজিস্ট্রি অফিসের দূর্নীতি ও অনিয়মের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করা হয় ক্ষোদ জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে।
জেলার সবকটি সাব রেজিস্ট্রি অফিসের অনিয়ম ও দূর্নীতির খবর ডাকতে কথিপয় সাংবাদিকদের মাসোয়ারা দেয় ময়মনসিংহ জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়। কথিপয় এসব সাংবাদিকদের আনগোনা এবং জেলা রেজিস্ট্রারের সাথে নিবিড় সখ্যতা যা সিসি ফুটেজ চেক করলেই প্রমাণ পাওয়া যাবে। তাছাড়া এসব কথিপয় সাংবাদিক মেনেজের টাকা বিতরণ করেন জেলা রেজিস্ট্রি কার্যালয়ের মোহাম্মদ মতিউর রহমান ও আতিকুল রহমান এবং সদর সাব রেজিস্ট্রি কার্যালয়ের রের্কড কিপার জহিরুল ইসলাম।
বিবাহ রেজিস্ট্রি ও তালাক নিবন্ধন। অধিক মুনাফার আশায় কাজী আব্দুল্লাহর মত কর্মরত বেশ কিছু কাজী তাদের সেরেস্তা ব্যবহার করতে দিচ্ছেন এই সব ভুয়া কাজিদের। ফলে এসব সেরেস্তা ব্যবহার করেই এসব বাল্যবিবাহ পড়ানো হচ্ছে।
এসব অনিয়ম তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে মনে করেন স্হানীয় সচেতন মহল।তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন জেলা রেজিস্ট্রার মোঃ মোহসেন মিয়া।