খাইরুল ইসলাম আল আমিন: গুদামজাত চালে বাতাস লাগলে চালের ওজন কমে যায়। সাটার খুলে দিলে গুদামের লেয়ারে বাতাস লেগে ৫১ কেজি বস্তার ওজন কমে ৫০ কেজিরও কম হবে। এখন এই ঘাটতি কি ডিলার তার বাপের সম্পত্তি বিক্রি করে দিবে ? নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ১৫ টাকা কেজির চাল বিতরণে ওজনে কম দেয়ার অভিযোগের তদন্ত করতে এসে সাংবাদিকদের এমন কথা বলেছেন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা খাদ্য গুদামের এএসআই প্রবাস চন্দ্র দাস।
এসময় তিনি ডিলারের পক্ষ নিয়ে আরও বলেন প্রতি ৩০ কেজিতে আধা কেজি (৫০০ গ্রাম) কম দেয়া যাবে।
ভিডিওতে দেখুন এএসআই প্রবাস চন্দ্র দাসের কথাবার্তা
জানা যায়, মঙ্গলবার উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নে খাদ্য অধিদপ্তরের ১৫ টাকা কেজি দরের চাল বিতরণকালে ৩০ কেজি চাল দেয়ার কথা থাকলেও দেয়া হচ্ছে ২৮ কেজি। উচাখিলা বাজারের ডিলার এম এ মালেক সরকারের দোকান থেকে কার্ডধারীরা ৩০ কেজি চালের মূল্য দিয়ে চাল নিতে হচ্ছে ২৮ কেজি। সরকারিভাবে বস্তাসহ চাল দেয়ার কথা থাকলেও ডিলাররা বস্তার নাম করে ক্রেতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ২০ টাকা আদায় করে নিচ্ছে।
আরো পড়ুন >>হতদরিদ্রদের ১০ টাকা কেজির চাল ওজনে কম
চাল নিতে আসা একাধিক কার্ডধারীরা জানান, প্রতিবার এখান থেকে চাল নিয়ে অন্য যে কোন দোকানে মাপ দিলেই দেখা যায় দেড় থেকে দুই কেজি কম। পরে বিষয়টি প্রমাণ করতে ওই ডিলারের উপস্থিতিতে পার্শ্বের একটি দোকানে বিক্রিত চাল ওজন দিলে ২ কেজি কম হয়। দুই কেজি কমের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিলার মালেক বলেন, আমার দোকান থেকে বের হয়ে অন্য কোথাও হয়তো বিক্রি করে দিয়েছে, আমি ওজনে কম দেইনি।
একই দিনে পার্শ্বের ডিলার ওমর ফারুকের দোকানে গিয়েও দেখা যায় সেখানেও ওজনে এক কেজি কম দেয়া হচ্ছে। এ সম্পর্কে ডিলার ফারুক বলেন, বস্তা খুলে মাপ দিলে কিছুটা কম হতেই পারে। চাল বিক্রয়কালে ডিলারের দোকানে ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে চাল বিক্রয় করার নির্দেশ থাকলেও সরেজিনে ট্যাগ অফিসারকে পাওয়া যায়নি। এ অনিয়ম সম্পর্কে উপজেলা নিবার্হী অফিসার হাফিজা জেসমিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চাল কম দেয়ার কোন সুযোগ নেই।
বিষয়টি তিনি দেখছেন। পরে ইউএনও’র নির্দেশে উপজেলা খাদ্য বিভাগের উপ-পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন ও উপজেলা খাদ্য গুদামের এএসআই প্রবাস চন্দ্র দাস ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঈশ্বরগঞ্জ খাদ্য কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, আমি ঢাকায় আছি। ডিলারের সাথে কথা বলে দেখছি।
উল্লেখ্য, ডিলার এম এ মালেকের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে আরো বেশ কয়েকবার ওজনে কম দেয়ার অভিযোগ দিলেও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।