খাইরুল ইসলাম আল আমিন:
স্থানীয় বাজারে একটি পাবলিক টয়লেট নির্মাণের জন্য ২লাখ ৪৪ হাজার টাকা বরাদ্দ করে গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (টিআর)। প্রায় দুই বছর আগে এই টাকা বরাদ্ধ হলে তখনই পুরো টাকা উত্তোলন করেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। পরে আংশিক কাজ করে বাকী প্রায় দুই লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।
এমন ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর এলাকায়। ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের রামগোপালপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছেই একটি বাড়িতে যাওয়ার প্রবেশ পথেই অসমাপ্ত টয়লেটটি দেখা যায়।
এলাকার লোকজন জানায়, গত প্রায় দুই বছর আগে এই টয়লেটটি তৈরি করান রামগোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। ৮/১০দিন কাজ করে একটি অবকাঠামো তৈরি করে উপরে ছাউনি না দিয়েই ব্যবহার উপযোগি না করেই চলে যান। পরে এটি বছরের পর বছর পরে থাকতে থাকতে এখন পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে। এলাকার লোকজন জানান, নাম মাত্র কাজ করে বেশীরভাগ টাকা নিজের পকেটে পুড়েছেন চেয়ারম্যান।
স্থানীয় সুত্র জানায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে উপজেলা গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (টিআর) থেকে (২য় পর্যায়) ‘রামগোপালপুর বাসস্ট্যান্ডে দুই কক্ষ বিশিষ্ট পাবলিক ল্যাট্রিন নির্মাণ’ নামের একটি প্রকল্প দেওয়া হয়। ওই প্রকল্পের চেয়ারম্যান হন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল আমিন জনি। তিনিই ২০২১ সালের শেষের দিকে কাজটি শুরু করেন।
স্থানীয় জানায়, সর্বোচ্চ দশদিন কাজ করে ৮ ফুট উচ্চতা ও ১০ ফুট প্রস্থ দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি ফাউন্ডেশন দাড় করান। এই কাজটি করেন রাজমিস্ত্রি মাহবুব। তিনি জানান, প্রায় ১ হাজার টাকা রোজে তিনি ৮দিন কাজটি করেছেন। এই কাজে মোট ব্যয় হয়েছে ১২শ ইট, ১৩ বস্তা সিমেন্ট, দুই ট্রলি বালু, দুইটি আরএফএলের প্লাস্টিকের দড়জা, ১৪ ফুট পাইপ, দুইটি সাইফেন. দুইটি কমোট ও ৮টি চাক। অন্যদিকে উপরের ছাউনি দেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় কাজ সম্পন্ন না করেই এভাবেই পড়ে থাকে। ফলে নতুন করা এই কাজটি বর্তমানে নষ্ট হয়ে গেছে। মাহবুব জানান,এই কাজে সর্বোচ্চ খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। অথচ টিআরের তালিকা থেকে জানা যায়, ওই পাবলিক টয়লেটের জন্য মোট বরাদ্ধকৃত টাকা ২লাখ ৪৪ হাজার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে টয়লেটের সাথে বাড়ির মালিক জালাল উদ্দিন জানান, তাঁর চোখের সামনেই নামকাওয়াস্তে এই কাজটি করেছেন চেয়ারম্যান।
কাজ ধরলেও সম্পন্ন না করেই এভাবেই পড়ে থাকায় এখন সব নষ্ট হয়ে গেছে। প্রায় আড়াই লাখ টাকা বরাদ্ধের সরকারি এই কাজটি না করে টাকা আত্মসাত করায় বাসস্ট্যান্ড ও বাজারের লোকজনের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এর তদন্ত করে বিচারের প্রয়োজন।
জানতে চাইলে রামগোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.আব্দুল্লাহ আল আমীন জনি জানান, কাজটা কমপ্লিট না হইতেই ঝড়ে চালটি উড়ে যায়। পড়ে আর কাজটি কমপ্লিট করা হয়নি। তাছাড়া পাশেই একটি মার্কেট হইতেছিল। ওই মার্কেটের মালিক বলছিলেন তার কাজ শেষ হলে ল্যাট্রিনের কাজটি করতে। এখন দেখবো করা যায় কিনা।
এ বিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সোহেল রানা পাপ্পুকে মোবাইল ফোনে একাধীকবার কল দিলে তিনি রিসিভ করেন নি।