Durnitibarta.com
ঢাকাবুধবার , ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ধূলো-ধোঁয়ায় চলছে পাঠ, ইটভাটায় স্কুলের মাঠ

প্রতিবেদক
Khairul Islam Alamin
ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৩ ৬:৫৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

খাইরুল ইসলাম আল আমিন, ঈশ্বরগঞ্জ:

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে সরকারি নীতিমালাকে উপেক্ষা করে প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফসলি জমি ও বাসস্থানের পাশে অননুমোদিত ইটভাটা গড়ে তুলেছেন প্রভাবশালী শহিদুল ইসলাম। উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের ১৪৭ নম্বর সাবদুল সরকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সীমানা ঘেঁষে গড়ে উঠেছে ইকো ব্রিক্স নামের ইটভাটা।

বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের একাংশ ইটভাটার ভাটার দখলে থাকায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের খেলাধুলায় বিঘ্ন ঘটছে। বিদ্যালয়ে পাঠদানের সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

সরেজমিন দেখা যায়, স্কুলটির সীমানা ঘেঁষেই সারি বেঁধে রাখা হয়েছে কাঁচা ইট। ভাটায় জ্বলছে আগুন, পুড়ছে ইট। মাটি, জ্বালানি, ইট বোঝাই ট্রাক অনবরত যাওয়া আসা করছে। উচ্চশব্দ, ধুলা আর ধোঁয়ায় একাকার চারদিক। এরই মাঝেই চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও খেলাধুলা।

স্থানীয়রা জানান, ইটভাটা মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় বন্ধ হচ্ছে না ইটভাটার কার্যক্রম। কাছাকাছি আর কোনো স্কুল না থাকায় অভিভাবকরা সন্তানদের দূষিত পরিবেশে শিক্ষা গ্রহণ করাতে বাধ্য হচ্ছেন ।

শিক্ষার্থীরা জানায়, ধোঁয়া, ছাই আর ধুলোবালিতে তাদের শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। ক্লাস চলাকালীন ইটভাটার লরি ও ট্রাকের আসা-যাওয়ার বিকট শব্দে পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল গফুর বলেন, শুধু বিদ্যালয়ের পাশ ঘেঁষে ইটভাটা তৈরি করেছে এমন না, স্কুলের জমিও দখল করে রেখেছে ভাটার মালিক। বারবার তাদেরকে বলার পরও তারা আমাদের জমি ফিরিয়ে দিচ্ছে না। কালো ধোঁয়া, পোড়ামাটির গন্ধ, ধুলা ময়লা তো আছেই, ইট ভাটার কারণে বাচ্চারা অসুস্থ থাকে সব সময়। তাই আমাদের পাঠদানে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আমি গত ১২ জানুয়ারী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পেয়েছি। দায়িত্ব পেয়েই আমি উপজেলা নিবার্হী অফিসার বরাবর অভিযোগ দেয়ার প্রস্তুতি নিয়েছি।

ইকো ব্রিক্স এর প্রোপ্রাইটর রাকিবুল ইসলাম বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর কখনোই লাইসেন্স দেয় না। লাইসেন্স ছাড়া ভাটা চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন সিস্টেমটাই এমন, আমার একার পক্ষে প্রচলিত ধারার পরিবর্তন করা সম্ভব না। তাই আমি একা আইন মানতে গিয়ে নিজের ক্ষতি করতে রাজি নই।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, আইনানুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে ইটভাটা নির্মাণের কোনো সুযোগ নেই। আমি এ উপজেলায় নতুন যোগদান করার কারণে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে ইটভাটা রয়েছে কিনা আমার জানা নেই।

গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফৌজিয়া নাজনিন বলেন, আজকেই বিষয়টি আমি জানতে পারলাম। পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে কথা বলে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

পরিবেশ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের বিভাগীয় উপ-পরিচালক রুবেল মাহমুদের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, তথ্যটি আমার জানা ছিলোনা। অতি শিঘ্রই তদন্ত পুর্বক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।