পঞ্চগড়ে বিএনপির গণমিছিল কর্মসূচিতে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে আব্দুর রশিদ আরেফিন নামে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা নিহত হয়েছেন। তিনি ময়নাদিঘী ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলা ও মহানগরে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।
সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিএনপির এ গণমিছিল কর্মসূচি পৃথকভাবে পালন করে জামায়াত।
শনিবার ঢাকা ও রংপুর বিভাগ ছাড়া দেশের অন্যান্য মহানগর ও জেলায় বিএনপির পূর্বঘোষিত গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গোলাপবাগের সমাবেশ থেকে ২৪ ডিসেম্বর ঢাকাসহ সারাদেশের মহানগর ও জেলায় গণমিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। কিন্তু ২৪ ডিসেম্বর ঢাকায় আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন এবং রংপুরে সিটি করপোরেশন নির্বাচন চলমান থাকায় এ দুটি মহানগরে আগামী ৩০ ডিসেম্বর গণমিছিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও দলের কারাবন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তিসহ ১০ দফা দাবিতে সারাদেশে বিএনপি ও জামায়াতের পৃথক গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। পুলিশের বাধা, বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ ও নেতাকর্মীদের আটকের মধ্য দিয়ে এসব মিছিল সম্পন্ন হয়েছে। পঞ্চগড়ে পুলিশ বিএনপির সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আব্দুর রশিদ আরেফিন নামে একজন বিএনপি নেতা নিহত হন। সারাদেশে আহত হয়েছেন কয়েকশ। আটক হয়েছেন শতাধিক। এছাড়া অন্তত ৫টি জেলায় পুলিশের বাধায় মিছিল পণ্ড হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর
পঞ্চগড়
পঞ্চগড়ে বিএনপির গণমিছিল কেন্দ্র করে শনিবার দুপুরে পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আবদুর রশিদ আরেফিন (৫০) নামে বিএনপির এক নেতা নিহত হয়েছেন বলে দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তি বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন বলে জানিয়েছে দলটি।
এ ছাড়া সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১০ জনকে আটক করেছে। আহত নেতাকর্মীদের উদ্ধার করে পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নিহত আবদুর রশিদ আরেফিনের লাশ ওই হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
পঞ্চগড় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা করেছে। এতে আমাদের আবদুর রশিদ আরেফিন নামে একজন মারা গেছেন। এ ছাড়া আমাদের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তৌফিক আহমেদ বলেন, ‘আবদুর রশিদ আরেফিন নামে ওই ব্যক্তিকে আমরা মৃত অবস্থায় হাসপাতালে পেয়েছি। আসলে তিনি কীভাবে বা কী কারণে মারা গেছেন, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। এ জন্য এখনই তা পরিষ্কার করে বলা যাচ্ছে না।’
পঞ্চগড়ে বিএনপি-পুলিশের সংঘর্ষ চলাকালে শহরের সিনেমা রোডে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
অন্যদিকে বিএনপি ও পুলিশের সংঘর্ষ থেমে যাওয়ার পর জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল লতিফ মিঞা বলেন, ‘বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিলের জন্য জড়ো হয়েছিলেন। এ সময় আমরা তাদের সড়ক বন্ধ করতে নিষেধ করি। তারা কথা না শুনে সড়ক বন্ধ করে দেন। এ সময় তাদের সরিয়ে দিতে গেলে সংঘর্ষ বাঁধে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’
পুলিশ, বিএনপির নেতাকর্মী ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শনিবার দুপুরে গণমিছিল কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলা বিএনপি মিছিলের আয়োজন করে। দুপুর আড়াইটার দিকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে এসে জড়ো হন। সড়কে মিছিল বের করার সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে বিএনপির নেতাকর্মীদের। একপর্যায়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিপেটা করে। পরে বিএনপির নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকলে পুলিশ দফায় দফায় কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এ সময় শহরের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। মানুষ ছোটাছুটি করতে থাকে। যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিকাল সোয়া ৪টার দিকে জেলা শহরের সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। পরে ধীরে ধীরে দোকানপাট খুলতে থাকলেও সবার মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সাতক্ষীরা
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন, খালেদা জিয়াসহ আলেম-ওলামাদের মুক্তির দাবিসহ ১০ দফা দাবিতে সাতক্ষীরায় বিক্ষোভ ও গণমিছিল করেছে সাতক্ষীরা জামায়াত।
শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শহরের হাটের মোড় থেকে মিছিল শুরু হয়। এ সময় জামায়াতের আরেকটি মিছিল হাটের মোড় থেকে তুফান মোড়ের দিকে যাত্রা শুরু করলে পুলিশের বাধার মুখে পণ্ড হয়ে যায়। এ সময় নাশকতা সৃষ্টির অভিযোগে ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মিছিলের নেতৃত্ব দেন সাতক্ষীরা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আজিজুর রহমান। এ সময় এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে চলমান পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ এক ভয়াবহ পরিস্থিতিতে নিপতিত। দেশ অব্যাহতভাবে নতুন নতুন সংকটের দিকে ধাবিত হচ্ছে।’
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু জিহাদ ফখরুল ইসলাম বলেন, জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা সকালে নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা করলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১৬ জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে।
চুয়াডাঙ্গা
শনিবার বিকাল ৩টার দিকে চুয়াডাঙ্গা শহরের কোর্টমোড় এলাকায় গণমিছিলের প্রস্তুতিকালে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শরীফুজ্জামান শরীফসহ ৫ জনকে আটক করে পুলিশ। এছাড়া নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে শহরের শহীদ রবিউল ইসলাম সড়ক নিয়ন্ত্রণে নেয় পুলিশ। পণ্ড হয়ে যায় বিএনপির কর্মসূচি।
আটকরা হলেন- জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শরীফুজ্জামান শরীফ, সদস্য আবু বক্কর সিদ্দিক আবু, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক রোকন, আইলহাস বিএনপি নেতা আবু হানিফ ও জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব খাঁন।
চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান লালন জানান, বিএনপির মিছিল থেকে হামলা ভাঙচুর ও ক্ষতির আশঙ্কার তথ্য ছিল। পরিস্থিতি অশান্ত করার পরিকল্পনা ছিল তাদের।
দিনাজপুর
শনিবার দুপুর ১২টার দিকে শহরের বাহাদুরবাজার এলাকা থেকে একটি মিছিল বের করে জামায়াত। এ সময় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে স্টেশন রোড ও স্টেশন চত্বর থেকে জামায়াত-শিবিরের ৭ নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ। এর কিছু সময় পর শহরের নিমনগরস্থ ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে আরো ৪ জনকে আটক করা হয়।
দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীরুল ইসলাম জানান, সকাল থেকে শহরের বাহাদুর বাজারের রাস্তা অবরোধ করার চেষ্টা করে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়। সেখান থেকে ৭ জনকে আটক করা হয়। এছাড়া নিমনগরস্থ ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ডে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করলে সেখান থেকে আটক করা হয় আরও ৪ জনকে।
ওসি আরও বলেন, জামায়াত-শিবির গত ১৬ ডিসেম্বর একইভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে নাশকতা করার চেষ্টা চালিয়েছিল। আটকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আটকদের ৬ জনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন- বীরগঞ্জ উপজেলার আলামিন হোসেন (৪০), এরশাদ আলী (৩০), আলামিন ইসলাম (৩২) ও আজগর আলী (৪৫) এবং চিরিরবন্দর উপজেলার আতাহার আলী (৪৫) ও হাসিনুর রহমান (২৫)।
জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা শনিবার ভোর থেকেই বিক্ষিপ্তভাবে শহরের বিভিন্ন অলিগলিতে অবস্থান নেয়। দুপুর ১২টায় তারা লিলির মোড় থেকে রেলস্টেশনের প্রধান ফটকে অবস্থান নেন। পুলিশ এ সময় রেলস্টেশনের প্রধান ফটক এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের ঠেকানোর চেষ্টা করে। একপর্যায়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে জামায়াতের সদস্য আজগর আলীকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। এতে নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে মিছিল বের করেন। পরে মিছিলটি বাহাদুর বাজার গোলকুঠি হয়ে হাসপাতাল মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। মিছিল শেষে নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে পুলিশ আরও ১০ জনকে আটক করে।
জয়পুরহাট
শনিবার সকালে শহরের বামনপুর সগুনা চারমাথা মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল করে জামায়াতে ইসলামী জয়পুরহাট সদর উপজেলা শাখা। এ সময় অবিস্ফোরিত ৬টি ককটেলসহ জেলা জামায়াত-শিবিরের ১২ নেতাকর্মীকে আটক করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
আটকরা হলেন- সদর উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর শাহ আলম দেওয়ান, জামায়াত নেতা নাহিদুল ইসলাম, জামায়াত কর্মী শহিদুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, শিপন, নুর নবী, জেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি আসাদুল ইসলাম আসাদ, সেক্রেটারি মামুনুর রশিদ, শিবিরকর্মী মারুফ, মেহেদী হাসান, মেশকাত শরীফ ও সোহরাব আলী।
জয়পুরহাট জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি শাহেদ আল মামুন জানান, সকালে সদর উপজেলার বামনপুর সগুনা চারমাথা এলাকায় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের একটি ঝটিকা মিছিল বের হয়। এ সময় গোয়েন্দা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা ছাড়াও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে ডিবি পুলিশের ৩ সদস্য আহত হন, তারা হলেন, ডিবি পুলিশের এসআই জাহাঙ্গীর আলম, এসআই আমিরুল ইসলাম ও এএসআই মহবুব সিদ্দিকী। এ সময় ডিবি পুলিশ ৬ রাউন্ড ফাঁকা গুলি নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ঘটনাস্থল খেকে জেলা জামায়াতের ১২ জন নেতাকর্মীকে আটক করা ছাড়াও ৬টি ককটেল জব্দ করা হয়েছে বলেও জানান ডিবি পুলিশের এই কর্মকর্তা।
ঝালকাঠি
শনিবার বেলা ১১টার দিকে শহরের আমতলা রোডস্থ জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে থেকে গণমিছিল শুরু করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। মিছিলটি অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। পরে মিছিল সমাপ্ত করে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করা হয়।
ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন জানান, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিএনপির মিছিলটি শহরের প্রধান সড়কে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
হবিগঞ্জ
শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় শহরের শায়েস্তানগর ট্রাফিক পয়েন্ট থেকে জামায়াতে ইসলামী হবিগঞ্জ জেলা শাখা গণমিছিল বের করে। এতে নেতৃত্ব দেন জেলা শাখার সেক্রেটারি কাজী মহসিন আহমেদ। মিছিল শুরু হলে পুলিশ ব্যানার কেড়ে নেয়। এরপর শায়েস্তানগর বাজারের সামনে পথসভা শুরু হলে পুলিশ তা ছত্রভঙ্গ করতে গেলে সংঘর্ষ বাঁধে। জামায়াত নেতাকর্মীরা পুলিশের দিকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। পুলিশও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পাল্টাধাওয়া করলে জামায়াতের পথসভা পণ্ড হয়ে যায়। তবে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
সদর মডেল থানার ওসি গোলাম মর্তুজা জানান, জামায়াত মিছিল বের করলে পুলিশ তা রুখে দেয়। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।