লিবিয়া থেকে নৌকায় করে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় জমে মারা যাওয়া ৭ বাংলাদেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীকে ইতালিতেই দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশটির সিসিলি দ্বীপের অ্যাগ্রিজেন্তোর পালমা দি মন্তেকিয়ারোর মেয়র স্তেফানো কাস্তেল্লিনো জানিয়েছেন পৌর এলাকার কবরস্থানে তাদের দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করে স্তেফানো কাস্তেল্লিনো বলেছেন, নিহত সাতজনের মরদেহ অ্যাগ্রিজেন্তো প্রভিন্সেরই দ্বীপ লাম্পেদুসাতে রয়েছে। সেখান থেকে যাত্রীবাহী জাহাজে করে রবিবার সন্ধ্যায় মরদেহগুলো নেওয়া হবে সিসিলি’র এম্পেদোকলে বন্দরে।
গত শুক্রবার রাতে ইতালিতে বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে জানানো হয়েছিল, লাশগুলো দেশে ফেরানোর জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দূতাবাস। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে দূতাবাস আরও জানায়, দীর্ঘ সময় তীব্র ঠাণ্ডায় থাকার ফলে ‘হাইপোথার্মিয়া’য় মারা গেছেন ওই সাত বাংলাদেশি। তারা ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপ ইতালির ল্যাম্পেদুসা যাচ্ছিলেন। পথে নৌকায় হাইপোথার্মিয়ায় (শরীরের তাপমাত্রা হ্রাস) আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
ইতালির সিসিলি দ্বীপের অ্যাগ্রিজেন্তো শহরের প্রসিকিউটর লুইগি প্যাট্রোনাজ্জিও এক বিবৃতির বরাত দিয়ে ইতালিয়ান বার্তা সংস্থা এএনএসএ- জানায়, হাইপোথার্মিয়ায় মারা যাওয়া সাত অভিবাসীপ্রত্যাশীর সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। নৌকাটি দুই-তিন দিন আগে লিবিয়া থেকে ইতালির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। জনবসতিহীন ইতালিয়ান দ্বীপ ল্যাম্পেদুসার উপকূল থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে নৌকাটিকে দেখতে পান কোস্টগার্ড সদস্যরা। নৌকায় তিনজনের মৃতদেহ পাওয়া যায়। পরে নৌকাটি বন্দরে ভেড়ানোর আগেই আরও চার জনের মৃত্যু হয়।
এদিকে গতকাল শনিবার ইতালিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের মো. ইরফানুল হকের (কাউন্সিলর শ্রমকল্যাণ) সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে মৃত সাতজনের পরিচয় প্রকাশ করেছেন। তারা হলেন মাদারীপুর সদর উপজেলার পশ্চিম পিয়ারপুর গ্রামের ইমরান হোসেন, পিয়ারপুর গ্রামের রতন জয় তালুকদার, ঘটকচর গ্রামের সাফায়েত, মোস্তফাপুর গ্রামের জহিরুল, মাদারীপুর সদর উপজেলার বাপ্পী, সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার মামুদপুর গ্রামের সাজ্জাদ এবং কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার সাইফুল।