Durnitibarta.com
ঢাকারবিবার , ১২ জুন ২০২২
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ময়মনসিংহে প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা, অপহরণ করে গর্ভপাত

প্রতিবেদক
Admin
জুন ১২, ২০২২ ৯:১৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

খাইরুল ইসলাম আল আমিনঃ

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে এক প্রতিবন্ধী তরুণী (১৮)। ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য অন্তঃসত্ত্বা তরুণীকে অপহরণের পর জোড়পুর্বক গর্ভপাত করার অভিযোগে খাইরুল ইসলাম (২২) নামে যুবককে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। অভিযুক্ত খাইরুল ইসলাম উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের কান্দুলিয়া গ্রামের মাহতাব উদ্দিনের ছেলে। রবিবার (১২ জুন) বিকালে খাইরুল ইসলামকে সিনিয়র চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হলে বিচারক রাজিব আহমেদ তালুকদার তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পরিদর্শক প্রসুন কান্তি দাস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গৌরীপুর থানা পুলিশ অভিযুক্ত খাইরুল ইসলামকে আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে শনিবার (১১ জুন) রাতে ভিক্টিম তরুণীর মা বাদী হয়ে মোঃ খাইরুল ইসলাম, তার মা মদিনা আক্তার এবং তার চাচা সহ ৪ জনকে নাম উল্লেখ করে এবং ২/৩ অজ্ঞাত আসামী করে গৌরীপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে ওই দিন রাতেই পুলিশ ও র‌্যাব -১৪ গৌরীপুর উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামী খাইরুল ইসলামসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে।

এ বিষয়ে গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী বলেন, মামলার পর রাতেই অভিযান চালিয়ে ভিকটিম তরুণী কে উদ্বার সহ প্রধান আসামী খাইরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন সকালে খাইরুল ইসলামকে আদালতে ও ভিক্টিম তরুণীতে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।

মামলার নথির বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ভিক্টিম তরুণী প্রতিবন্ধী। আনুমানিক ৭ থেকে ৮ মাস আগে খাইরুল ইসলাম জোড়পুর্বক ধর্ষণ করে। সম্প্রতি ভিক্টিম তরুণী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে। ওই তরুণীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গত ২৭ মে মধ্যরাতে খাইরুল ও সোহেল ভিক্টিমের বাড়িতে ডুকে ভিক্টিমসহ তার মাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। কিন্তু, ওই তরুণীকে আটকে রেখে তার মাকে ছেড়ে দেয়। পরদিন খাইরুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ভিক্টিম তরুণী বাড়িতে নেই বলে তাকে তাড়িয়ে দেয়। এরপর বিভিন্ন জায়গায় খোঁজে না পেয়ে খাইরুলের মা বাবাকে জানালেও কোন সুরাহা হয়নি।

এরপর থেকে খাইরুল ও তরুণী নিখোঁজ ছিল। এমতাবস্থায় গতকাল শনিবার (১১ জুন) ওই তরুনীর মা ্যাব-১৪ অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করে। পরে র্যাবের পরামর্শে তরুণীর মা গৌরীপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই দিন রাতেই র্যাব ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে খাইরুল ইসলাম ও তার চাচা আসাদুজ্জামান গ্রেপ্তার করে। পরে আসাদুজ্জামানের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভিক্টিমকে উদ্ধার করে পুলিশ। ওসি খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃত খাইরুল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং গত ১ জুন কোর্ট ম্যারিজ করে বিয়ে করেছেন বলেও জানান তিনি।

ভিক্টিম তরুণী নিজেকে ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার দাবি করে বলেন, আমাকে ও আমার মাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে একদিন আটকে রাখে। এর এক দিন পর আমাকে বিয়ে করবে বলে ময়মনসিংহের একটি হাসপাতালে নিয়ে গর্ভপাত করে। গর্ভপাত করার পর আমাকে বিয়ে করে। এবিষয়ে ভিক্টিম তরুণীর মা বলেন, আমার মেয়ে কিছুটা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। এই সুযোগে খাইরুল ৭ থেকে আট মাস আগে মেয়েকে ধর্ষণ করে। কিন্তু, মেয়ে আমার কাছে কিছু বলেনি। সম্প্রতি তার শারীরিক পরিবর্তন হলে গর্ভবতী হওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে।

এই বিষয়টি ধামাচাপা দিতে খাইরুল গত মাসের ২৭ তারিখে আমাকেসহ মেয়েকে অপরহরণ করে নিয়ে গর্ভপাত করায়। পরে ১৭ দিন পরে আমার মেয়েকে পুলিশ ও র্যাব উদ্ধার করে। খাইরুলসহ এই ঘটনায় জড়িত সকলের শাস্তি চাই।