আবদুল কাদির :
ময়মনসিংহের তারাকান্দায় জায়গা না দেয়ায় আটকে আছে খাল খননের কাজ। খাল খনন করতে না পারায় প্রায় সাতশত একর জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে সময় হলেও বোরো আবাদ করতে পারছেন না কৃষকরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তারাকান্দা উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চর কৃষ্ণপুর ফসলের মাঠে জলাবদ্ধতার কারণে কোন ফসল করতে পারতেছে না কৃষকরা। এমনকি বর্ষা মৌসুমে আশপাশের এলাকার ঘর বাড়িতে পানি উঠে যেত। পরে আবেদনের প্রেক্ষিতে খাল খনন করার সিদ্ধান্ত নেয় স্থানীয় প্রশাসন।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত বোরো মৌসুমে কৃষ্ণপুর ফসলের মাঠ থেকে মোজাহারদী গ্রামের বাসিন্দা সুরুজ আলীর আবাদী জমি পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ একটি খাল খনন করার কাজ শুরু করে স্থানীয় প্রশাসন। সম্পুর্ণ খাল খননের কাজ শেষ পর্যায়ে চলে আসলেও মাঝখানে মাত্র ৬০ থেকে ৭০ গজ জমিতে খনন কাজে বাধা দেন স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ
মাহাবুবুল আলম বুলবুল। তিনি তার জমির উপর দিয়ে খাল দিবে না বলে জানায়। এরপর খাল খননের কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
সম্প্রতি, বোরো আবাদের সময় হলেও জমি থেকে পানি নেমে না যাওয়ায় স্থানীয় কৃষকরা তারাকান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর খাল কাঁটার জন্য জন্য গত ৫ ডিসেম্বর ও ২ জানুয়ারী আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তবে, কোন সুরাহা হয়নি।
এসব ঘটনার পর স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ মাহাবুবুল আলম বুলবুল খালের জন্য জমি দিতে রাজি হয়। তবে, বুলবুলের জমির পাশ দিয়ে আব্দুর রহমানের জমি। এখন আব্দুর রহমান খালের জন্য দিতে রাজি হচ্ছে না। এতে প্রায় ৭০০ একর জমি বোরো আবাদ আটকে আছে।
এবিষয়ে চর কৃষ্ণপুর গ্রামের শাজাহান মিয়া বলেন,এই খাল না খনন করার কারণে প্রায় ৭০০ একর জমিতে জলাবদ্ধতা তৈরী হয়েছে। বর্যা মৌসুমে বাড়ি ঘরেও পানি উঠে। বেশ কিছুদিন আগে বু্ুলবুল মেম্বার তার জমি দিয়ে খাল দিবে না বলে খাল খনন আটকে যায়। এখন বুলবুল মেম্বার জায়গা দিতে রাজি হলেও আব্দুর রহমান নামে আরেক জন জমি দিতে রাজি হচ্ছে না। এখন প্রশাসনই বিষয়টা মিমাংসা করতে পারেন। না হলে আমরা কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়বে।
একই গ্রামের মোঃ আলতাফ হোসেন বলেন, একজন লোকের কারণে ৭০০ একর জমির বোরো আবাদ আটকে আছে। অনেক কৃষক এই জমিতে বোরো আবাদ করা নিয়ে শঙ্কায় আছে। আমারও এখানে প্রায় ১০ একর জমি আছে। জলাবদ্ধতার কারণে বোরো আবাদ করতে পারছি না। এই জমিতে যদি ধান লাগাতে না পারি। তাহলে পরিবারের লোকজন নিয়ে পথে বসতে হবে।
এবিষয়ে সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ মাহাবুবুল আলম বুলবুল বলেন, মানুষের যেন ক্ষতি না হয়। তাই, আমার জমির পাশ দিয়ে খাল করার কথা বলেছি। এখন অন্য কেউ যদি বাধা দেয়। সেখানে আমার কিছু করার নেই।
এবিষয়ে আব্দুর রহমান বলেন, প্রথম যখন খাল খনন শুরু হয়। তখনই আমি গ্রামবাসীর কাছে বলেছিলাম। ওই পাশে ৩৪ কাঠা জমির উপর দিয়ে খাল দিলে এখানে জমি দিব না। কারণ, আমার এতো জমি নাই,যে এক জায়গায় ৩৪ কাঠার উপর দিব, আবার এখানেও দিব। এটা সম্ভব না।
এবিষয়ে তারাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজাবে রহমত বলেন, কোন ফসলি জমি অনাবাদি রাখা যাবে না। দুই পক্ষকে নিয়ে বসে বিষয়টি মিমাংসা করা হবে। যেন কৃষকরা বোরো আবাদ করতে পারে।