স্বাস্থ্য ডেস্ক :
শীতকালে ত্বকের যত্ন নিতে হাজার একটা জিনিস ব্যবহার করি। কিন্তু স্কিন যদি সঠিকভাবে ময়েশ্চারাইজড থাকে, তাহলে আলাদা করে কিছু করার প্রয়োজন হয় না। শুষ্ক ত্বককে আর্দ্রতা প্রদান করা ময়েশ্চারাইজারের প্রধান কাজ বলা যেতে পারে। গাছ যেমন পানি ছাড়া তার সতেজতা হারায়, ঠিক তেমনই ময়েশ্চারাইজার ছাড়া আমাদের স্কিন তার সতেজতা বজায় রাখতে পারে না।
শীতের শুরুতে প্রকৃতি জানান দিচ্ছে এবার ময়েশ্চারাইজার লাগাতেই হবে। কারণ এ সময়ে চামড়া বেশি খসখসে থাকে। ত্বকের খসখসে ভাব দূর করতে ময়েশ্চারাইজার বিশেষ ভূমিকা পালন কলর। প্রতিবার আমরা সমস্যায় পড়ি কেমন ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে তাই নিয়ে। সকলেই পরামর্শ চান কেমন ময়েশ্চারাইজার কিনবেন, কখন লাগাবেন।
এছাড়াও আযুর্বেদিক ময়েশ্চারাইজারের দিকেও অনেকেই ঝুঁকছেন। যাদের ত্বক শুকনো, মিশ্র প্রকৃতির তাদের জন্য তেল বা ফ্যাট নির্ভর ময়েশ্চারাইজার সবচেয়ে ভালো। কারণ এতে আর্দ্রতা বজায় রাখে। আর যাদের ত্বক তৈলাক্ত, অল্পেই ঘামেন তাদের জন্য হাইড্রেট বা পানি নির্ভর ময়েশ্চারাইজার ভালো। যাদের ত্বক সংবেদনশীল তাদের খুব সহজেই অ্যালার্জি হতে পারে। তাই তারা কেনার আগে ভালো করে যাচাই করে নেবেন।
ঘরোয়া কোনও কিছুর কখনই বিকল্প হয় না। আর তাই বাড়িতেই বানিয়ে নিন ময়েশ্চারাইজার। উপকরণ খুব সামান্যই। ত্বক অনুযায়ী বানিয়ে নিতেও পারবেন। এতে বিষাক্ত কেমিক্যালের হাত থেকে ত্বক থাকবে সুরক্ষিত। সেই সঙ্গে অ্যালার্জি, ব্রণের সমস্যাও হবে না। শীতের শুরুতেই রইল ঘরোয়া উপায়ে ময়েশ্চারাইজার বানানোর পদ্ধতি।
নারিকেল তেল দিয়ে
খাঁটি নারিকেল তেল: হাফ কাপ
ভিটামিন ই ক্যাপসুল: ৩টি
ল্যাভেন্ডার এসেন্সিয়ল অয়েল: ১২ ফোঁটা
যেভাবে বানাবেন
একটা বাটিতে গরম পানি নিন। তার উপর একটা বাটিতে নারিকেল তেল ঢেলে ভালো করে গলিয়ে নিন। এবার ওর মধ্যে বাকি সব উপকরণ ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে ওই গরম পানিতে বাটি বসানো অবস্থাতেই সবটা করবেন। এবার পুরো মিশ্রণটা ঠান্ডা হতে দিন। ঠান্ডা হলে কাচের পাত্রে রেখে ব্যবহার করুন।
অ্যালোভেরা ময়েশ্চারাইজার
নারিকেল তেল: ২ চামচ
অ্যালোভেরা জেল: ৪ চামচ
ভিটামিন ই অয়েল: এক চামচ
আমন্ড অয়েল: ২ চামচ
যেভাবে বানাবেন
একটি পরিষ্কার বাটিতে প্রথমে অ্যালোভেরা জেল নিন। এবার ওর মধ্যে নারিকেল তেল মিশিয়ে নিন। খুব ভালো করে মিশলে ভিটামিন ই ও আমন্ড অয়েল মিশিয়ে নিন। প্রতিদিন গোসলের পর ব্যবহার করুন। ত্বকের দাগ, ছোপ থেকে বাঁচায়। সূর্যের আলো থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও শুকনো হয়ে যাওয়া থেকে ত্বককে রক্ষা করে। যাঁদের ত্বকের সমস্যা থাকে তাঁদের জন্য খুব ভালো এই ময়েশ্চারাইজার।
আমন্ড অয়েল ময়েশ্চারাইজার
আমন্ড অয়েল: ১ চামচ
মধু: ১ চামচ
কোকো বাটার: ১ চামচ
গোলাপ পানি: ২ চামচ
যেভাবে বানাবেন
কোকো বাটার আর আমন্ড অয়েল ভালো করে মিশিয়ে নিন। একটা পাত্রে গরম জল নিয়ে তার উপর অন্য একটি বাটি বসিয়ে কোকো বাটার ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার একটু ঠান্ডা করে মধু আর গোলাপ জল মিশিয়ে নিন। পুরোটা ঠান্ডা হলে কাচের শিশিতে রাখুন। সংবেদনশীল ত্বক (Sensitive Skin) এর জন্য বেশ ভালো।
অলিভ অয়েল দিয়ে
অলিভ অয়েল: হাফ কাপ
ভিটামিন ই ক্যাপসুল: ২টা
নারকেল তেল: ১ চামচ
বিসওয়াক্স: ১ চামচ
যেভাবে বানাবেন
অলিভ অয়েল আর নারিকেল তেল খুব ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। এবার ওর মধ্যে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভেঙে দিন। পুরো মিশ্রণটা ঠান্ডা করে বোতলে ভরে ফেলুন। এই ময়েশ্চারাইজার কিন্তু শুষ্ক ত্বকের জন্য খুব ভালো। তবে সূর্যের আলো পড়ে এমন জায়গায় কৌটা রাখবেন না।
আপেল ময়েশ্চারাইজার
আপেল: ২টা
অলিভ অয়েল: ১ চামচ
গোলাপ পানি: ৫ ফোঁটা
যেভাবে বানাবেন- আপেলের বীজ বের করে সিদ্ধ করে নিন। এবার ঠান্ডা করে নিয়ে মিক্সিতে মিহি পেস্ট বানিয়ে ফেলুন। এবার ওর মধ্যে অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। ঠান্ডা হলে গোলাপ পানি মিশিয়ে ব্যবহার করুন। আপেলের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মুখকে চকচকে রাখে। সেই সঙ্গে শুষ্ক ত্বকের জন্য খুবই ভালো এই ময়েশ্চারাইজার।
গ্রিন টি ময়েশ্চারাইজার
গ্রিন টি এসেন্স: ১ চামচ
আমন্ড অয়েল: ১ চামচ
গোলাপ পানি: ১ চামচ
এসেন্সিয়ল অয়েল: ১ চামচ
অ্যালোভেরা জুস: ১ চামচ
বিওয়াক্স- ১ চামচ
যেভাবে বানাবেন
আমন্ড অয়েল আর বিওয়াক্স মিশিয়ে গরম করে নিন। এবার ঠান্ডা হলে বাকি উপকরণ মিশিয়ে নিন। ব্যাস, এবার ফ্রিজে রাখলেই তৈরি ময়েশ্চারাইজার। দূষণের হাত থেকে বাঁচায় এই ময়েশ্চারাইজার। এছাড়াও মুখে কোনও দাগ থাকলে আর সংবেদনশীল ত্বকের জন্য খুবই ভালো।