বার্তা ডেস্ক।। সন্ধ্যার পর হঠাৎ করে রাজধানীতে অন্তত চারটি বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বিএনপি-জামায়াতের ডাকা অবরোধ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন রাজধানীর নতুনবাজার, শ্যামলী, আসাদগেট ও মিরপুরের পল্লবী এলাকায় বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
সবশেষ বুধবার রাত ৯টার দিকে রাজধানীর পল্লবী থানার সিরামিক রোডে যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সিরামিক রোডে বাসটি দাঁড়িয়ে ছিল। বাসটিতে কোনো যাত্রী বা কোনো মানুষ ছিল না।
পল্লবী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জিয়া বলেন, সিরামিক রোডে বাসে আগুনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর বাড্ডা নতুনবাজার এলাকার কোকাকোলা অফিসের সামনে বৈশাখী পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা শাহজাহান সিকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজধানীর শ্যামলী স্কয়ারের সামনে ওয়েলকাম পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওয়েলকাম পরিবহনে যাত্রী বেশে উঠে আগুন দিয়ে বাসটি থেকে নেমে যায় কয়েকজন। পরে স্থানীয়রা দ্রুত আগুন নিভিয়ে ফেলেন। এ ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
ঢাকা মহানগর পুলিশ ডিএমপি থেকে মুঠোফোন পাঠানো এক ক্ষুদে বার্তায় বলা হয়, দুষ্কৃতকারীরা যাত্রীবেশে বাসে উঠে আগুন লাগিয়ে নেমে যায়।
ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনার (এসি) ইমরুল গণমাধ্যকর্মীদের বলেন, সবার সহযোগিতায় দ্রুত আগুন নেভানো হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
এছাড়া একই সময়ে আসাদগেট আড়ংয়ের সামনেও একটি বাসে অগ্নিসংযোগ করার খবর পাওয়া গেছে।
বুধবার বিকাল চারটার দিকে মিরপুরে কাফরুল থানার সামনে ইতিহাস পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
কাফরুল থানার ওসি ফারুকুল আলম বলেন, ঘটনার পর পরই দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
এর আগে সকাল ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে রাজধানীর মুগদা এলাকায় মিডলাইন পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ফায়ার সার্ভিস যাওয়ার আগেই বাসটি পুড়ে ভস্মিভূত হয়ে যায়। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনার প্রভাব পড়েছে সড়কেও। সকাল থেকে রাজধানীর অধিকাংশ সড়ক ছিল ফাঁকা। আর সন্ধ্যার পরপর দুটি বাসে আগুনের ঘটনায় আরও ফাঁকা হয়ে যায় সড়ক। রাতে চারটি বাসে আগুনের এই প্রতিবেদন লেখার সময় মগবাজার, বাংলামোটর, ধানমন্ডি, পান্থপথ ও মিরপুর এলাকায় সড়কগুলোতে শুনশান নিরবতা বিরাজ করছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সড়কে সতর্ক টহল দিতে দেখা গেছে।
এদিকে অবরোধ প্রভাব পড়েছে নৌপথেও। যাত্রী কম থাকায় বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকার সদরঘাট থেকে বিভিন্ন রুটে লঞ্চ ছেড়েছে মাত্র ২৯টি । অন্য সময়ে দৈনিক ৬৫-৭০টি লঞ্চ চলাচল করে।