Durnitibarta.com
ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২
আজকের সর্বশেষ সবখবর

একসময় পর্দা কাঁপাতেন, সেই ময়ূরী এখন…

প্রতিবেদক
Khairul Islam Alamin
ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২২ ৬:১৯ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

প্রকৃত নাম মুনমুন আক্তার লিজা। চলচ্চিত্রে পরিচিত ময়ূরী নামে। ১৯৯৮ সালে হয়েছিল অভিষেক। ২০০৭ সাল পর্যন্ত ৩০০টিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন এই নায়িকা। একসময় তার উপস্থিতিতে কাঁপতো রুপালি পর্দা। কিন্তু গত ১৫ বছর ধরে তিনি অভিনয়ের বাইরে। কোথায় আছেন, কী করছেন নায়িকা ময়ূরী? সম্প্রতি তার দেখা মেলে একটি লাইভ চ্যাটে। সেখানে ময়ূরী জানান তার ক্যারিয়ারের খুঁটিনাটি ও বর্তমান জীবনযাপন সম্পর্কে।

অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি এখন নিজের বাড়িতে আছি। গাজীপুরের টঙ্গিতে একটা বাড়ি করেছি। স্বামী-সন্তান নিয়ে সেখানেই থাকি। এছাড়া মাঝে মাঝে আমেরিকাতে যাওয়া-আসা করি। ওখানে আমার ছোট ভাই থাকে, পুরা ফ্যামিলি থাকে। কয়েক মাস পর হয়তো আমরাও পারমানেন্টলি আমেরিকাতে চলে যাবো।’

এফডিসিপাড়ার অনেকে বলেন, ময়ূরীকে বহুদিন কাজে নেন না কোনো পরিচালক। এর প্রতিবাদ করে নায়িকা বলেন, ‘আমাকে কেউ কাজে নেয় না- এটা ভুল। আমি কাজ ছেড়ে দিয়েছি। কেউ এ কথা বলতে পারবে না যে, আমাকে ছবিতে নেয়নি। দুদিন আগেও পরিচালক রাজু চৌধুরী আমাকে ছবির অফার করেছে। চলচ্চিত্র ছেড়ে দেওয়ার পরও প্রচুর অফার এসেছে। কিন্তু আমি করিনি। আর এখন তো করবই না।’

কিন্তু একসময়ের তুমুল ব্যস্ত একজন নায়িকা কেন চলচ্চিত্র ছেড়ে দিলেন? তার কী কোনো দুঃখ-কষ্ট বা অভিমান আছে? ময়ূরী বলেন, ‘না না এসব কিছু নেই। ২০০৭ সালে আমি যখন প্রথম বিয়ে করি, তখনই ডিক্লেয়ার দিয়ে অভিনয় ছেড়ে দেই। কারণ, আমার স্বামী চাইনি আমি চলচ্চিত্রে থাকি। এখন যার সঙ্গে থাকি, সেও চায় না আমি আবার চলচ্চিত্রে ফিরি।’

একসময় আলোচনা ছিল, বাংলা চলচ্চিত্রে অশ্লীলতার মূল কেন্দ্রে ময়ূরী। তাকে অশ্লীল নায়িকা হিসেবেই বিবেচনা করা হতো। এটার কারণ কী? ময়ূরী বলেন, ‘আমি এটার ব্যাখ্যা দিতে যাবো না, দিলে অনেক সিনিয়রদের টেনে আনতে হবে। কিন্তু আমি কারও নাম প্রকাশ্যে আনতে চাই না। সে সময় আমাকে ওই ধরনের দৃশ্য করতে বাধ্য করা হতো। সিনিয়রদের দেখিয়ে আমাদেরকে বাধ্য করা হতো।’

এক্ষেত্রে কলকাতার জনপ্রিয় নায়িকা ঋতুপর্ণার উদাহরণ দেন ময়ূরী, যিনি একসময় বাংলাদেশের বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করেন এবং বেশ রগরগে দৃশ্যে দেখা যেত ঋতুপর্ণাকে। ময়ূরী বলেন, ‘আরও অনেকে আছেন, যাদের নাম বলতে চাই না। তাছাড়া আমাকে অশ্লীল নায়িকা কে বলে বা কারা বলে আমি জানি না। আমি কোনো অশ্লীল ছবি করিনি। আমি নাচের দৃশ্য করতাম। এর বাইরে কিছু দেখালে সেগুলো ছিল কাটপিস। আমাকে এবং মুনমুনকে ব্যবহার করা হতো।’

কিন্তু ছবি মুক্তির পর তো দেখা যেত সেখানে কাটপিস না কী ঢোকানো হয়েছে- তার পরও কেন আবার ওই ধরনের ছবিতে অভিনয় করতেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ময়ূরী দাবি করেন, ‘না না, আমরা জানতাম না। জানার পর আমিও ছবি ছেড়ে দিয়েছি, মুনমুনও ছেড়ে দিয়েছে।’

একসময় ময়ূরীর সঙ্গে অশ্লীল নায়ক হিসেবে মেহেদীর নাম জুড়ে গিয়েছিল। এ জুটিকে অশ্লীল জুটি বলা হতো। তার প্রতিবাদ করে ময়ূরীর ভাষ্য, ‘আমি মেহেদীর সঙ্গে ছবিই করেছি মাত্র দুইটা বা তিনটা। এরপর মেহেদীর সঙ্গে আর কোনো কাজ করা হয়নি।’ নায়িকার প্রশ্ন, ‘আমি তো মান্না ভাইয়ের সঙ্গেও ছবি করেছি। তাহলে কি মান্না ভাই অশ্লীল নায়ক ছিলেন?’

কিংবদন্তি নির্মাতা ও গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ারের হাত ধরে চলচ্চিত্রে এসেছিলেন ময়ূরী। এরপর কেন বিতর্কিত হলো তার ক্যারিয়ার? নায়িকা বলেন, ‘কই বিতর্কিত হল? আমি তিনশোর উপরে ছবি করেছি। কোন পরিচালকের ছবি ময়ূরী করে নাই? কোন পরিচালক ময়ূরীকে ছবিতে নেয় নাই? শহীদুল ইসলাম খোকন থেকে শুরু করে কাজী হায়াৎ ভাই, কার ছবি আমি না করছি? একেক পরিচালকের সঙ্গে ১০-১২টা করে ছবি করেছি।’

কিন্তু এত কাজ করেও শিল্পী হিসেবে কি মূল্যায়ন পেয়েছেন ময়ূরী? অভিনেত্রীর দাবি, ‘অবশ্যই মূল্যায়ন পেয়েছি। অনেক দিন ছবি করি না। তার পরও আমি এখনও সম্মান পাই এবং আজীবন পেয়ে যাবো। আমি যেখানেই যাই না কেন, সবাই আমাকে খুব ভালোবাসে এবং রেসপেক্ট করে।’