সানজাদ রয়েল সাগর, বদলগাছী:
নওগাঁর বদলগাছী বঙ্গবন্ধু সরকারী মহাবিদ্যালয়ে শিক্ষা ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙ্গে পড়েছে। মহাবিদ্যালয়ের নানা সমস্যাসহ শিক্ষা সংকটের বেহাল অবস্থায় কর্তৃপক্ষ পড়েছে চরম বিপাকে । বদলগাছী সরকারী মহাবিদ্যালয়ে ২০ জন প্রভাষকের মধ্যে ১৭ জন প্রভাষকের পদ রয়েছে ফাঁকা । আর এই শিক্ষক সংকটের কারনে মানসম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছে কলেজের শিক্ষার্থীরা। এতে করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন ছাত্র-ছাত্রীর অভিভাবকসহ এলাকার সচেতন মহল।
মহাবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, কলেজে ২০ জন প্রভাষকের পদসহ প্রদর্শক, সহকারী অধ্যাপক, সহযোগি অধ্যাপক ও অধ্যক্ষ সহ মোট ৪১ টি পদ থাকলেও ১৯ টি পদে নেই কোন শিক্ষক ।
এর মধ্যে রসায়ন বিভাগের ১ জন প্রদর্শক পদ রয়েছে ফাঁকা, অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপকের পদ ফাঁকা, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সহ ৩টি পদ থাকলেও মাত্র ১ জন প্রভাষক দিয়ে চলছে এইচএসসি,ডিগ্রী ও অর্নাস এর ক্লাস অপিেদকে রাষ্ট্র বিঞ্জানেও চলছে একই অবস্থা। এছাড়াও ২০ জন প্রভাষকের মধ্যে ১৭ জন প্রভাষকের পদ রয়েছে ফাঁকা ।
শিক্ষক সংকটে শিক্ষা ব্যবস্থা ভেংগে পড়লেও সংকট সমাধানে নেই কোন মাথা ব্যাথা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্তৃপক্ষের। বরং তাঁদের খুশিমত তদবীর করতে পারলে কাকে কোথায় বদলী করতে হবে এ দায়ীত্ববোধ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ঠিকিই রয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়।
বর্তমান শিক্ষক সংকটের হাহাকার চলছে এই মহাবিদ্যালয়ে । কলেজে ঠিকমত ক্লাস হচ্ছে না এখন। ছেলে-মেয়েরা কলেজে যেভাবে আসে তাঁদের আবার সেভাবেই বাড়ী ফিরে যেতে হয়। তার পরেও সম্প্রতি উদ্ধর্তন কতৃপক্ষ ব্যবস্থাপনা বিভাগের আরও একজন শিক্ষককে অন্যত্র বদলী করে দেওয়ায় আরও হতাশ হয়ে পড়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ ।
বর্তমান সরকার শিক্ষারমান উন্নয়নে শিক্ষার প্রতি যে অধিক গুরুত্ব দিয়েছে। সরকারের সেই নীতি আর্দশের কোন ছোয়া এই কলেজে নেই। শিক্ষক সংকট যেন এই কলেজের পিছু ছাড়েনা বললেই চলে। প্রতিবছর শিক্ষক সংকটের সংবাদ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ করার পর দু’এক জন শিক্ষককে এই কলেজে বদলী করে দিলেও ৬মাস বা ১বছর পার হতে না হতে আবারও শুরু হয় উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের বদলী বাণিজ্য।
চলমান সময়ে বদলী বাণিজ্য মাত্রা অতিরিক্ত হওয়ায় বদলগাছী বঙ্গবন্ধু সরকারী মহাবিদ্যালয়ে যেন এক দূর্ভাগ্য নেমে এসেছে। আর এ কারনে কলেজের অধিকাংশ বিভাগে নেই কোন প্রভাষক। আর এ কারনে এইচ,এস,সি, ডিগ্রী সহ অনার্স ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশা রয়েছেন।
ডিগ্রী ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী মোসলেমা, কনিকা, ফারজানা সুলতানা, রিংকু আহম্মেদ ও এইচ,এস,সি ১ম বর্ষে শিক্ষার্থী সজিব হোসেন, অজিত কুমার সাহা, আরাফাত ও মারুফ হোসেন এর সংগে কথা বললে তারা জানান বর্তমান কলেজে শিক্ষক না থাকায় দু’একটা ক্লাস হয় আর যদি কোন দিন ঐ শিক্ষক না থাকে তাহলে সেই ক্লাস আর সেদিন হয় না।
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসার মোঃ হামিদুর রহমান এর সংগে কথা বললে তিনি বলেন শিক্ষক সংকটের হাহাকারের কথা আমি আর আপনাদের ব্যাখ্যা দিতে পারছি না। প্রতি সপ্তাহে শিক্ষক সংকটের কথা তুলে ধরে উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট শিক্ষক চাহিদা পত্র জমা করা হয়। কিন্তু তাঁরপরও কোন সুব্যবস্থা হচ্ছে না। এতে করে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশুনার ক্ষতি হচ্ছে বলে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশুনার কোন ক্ষতি হয়নি। তাছাড়া বিভিন্ন কলেজ থেকে শিক্ষক ধার করে এনে কলেজে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে ।
অপরদিকে এলাকার সচেতন মহল এই কলেজে খুব দ্রত প্রভাষক প্রদান করে বর্তমান সরকারে শিক্ষারমান উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রখার জন্য উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানিয়েছেন।