আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
উইঘুরসংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের চীনা দূতাবাসের একটি পোস্ট সরিয়ে ফেলেছে টুইটার। ওই পোস্টে দাবি করা হয় `জিনজিয়াং প্রদেশের সংখ্যালঘু মুসলিম নারীরা বাচ্চা তৈরির যন্ত্র নয়।’
গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়, চীনা দূতাবাসের ওই পোস্টে একটি আর্টিকেলের লিংক যুক্ত করা হয় যেখানে জিনজিয়াং প্রদেশে নারীদের জোর করে বন্ধ্যাকরণের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়।
টুইটার দাবি করেছে পোস্টটি টুইটারের নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। তবে কর্তৃপক্ষ বিস্তারিত কোনো তথ্য দেয়নি।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে চীনের বিরুদ্ধে ১০ লক্ষাধিক সংখ্যালঘু মুসলিমকে ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রাখা এবং মুসলিমদের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে নারীদের দেহে জোর করে বন্ধ্যা করার অভিযোগ জোরদার হয়েছে। তবে চীন বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের চীনা দূতাবাসের ওই পোস্টে চীনের মুখপাত্র দৈনিকের একটি আর্টিকেল সংযুক্ত করে বলা হয়, গবেষণায় দেখা গেছে; সন্ত্রাসবাদ বর্জন করায় জিনজিয়াং প্রদেশের উইঘুর নারীরা মুক্তি পেয়েছে এবং তাদেরকে বাচ্চা তৈরির যন্ত্রে পরিণত না করে লিঙ্গ সমতা এবং প্রজনন স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়েছে। ওই অনুচ্ছেদে উইঘুর নারীরা এখন অনেক বেশি আত্মপ্রত্যয়ী এবং স্বাধীন বলেও উল্লেখ করা হয়।
খবরে আরও বলা হয়, জিনজিয়াং উন্নয়ন গবেষণাকেন্দ্রের একটি অপ্রকাশিত গবেষণা থেকে এসব শব্দাংশ নেয়া হয়। সংযুক্ত আর্টিকেলে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে জিনজিয়াং প্রদেশে নিম্ন জন্মাহারের পেছনের কারণ হলো `ধর্মীয় চরমপন্থা বর্জন।’
ওই আর্টিকেলে কিছু পশ্চিমা রাজনীতিবিদ এবং গবেষক `উইঘুর নারীদের জোরপূর্বক বন্ধ্যাকরণের কারণে জনসংখ্যার পরিবর্তন হয়েছে‘ এমন দাবি প্রত্যাখান করা হয়।
টুইটার কর্তৃপক্ষ ওই পোস্টটি সরিয়ে ফেলার পর যুক্তরাষ্ট্রের চীনা দূতাবাস ভিন্ন ক্যাপশনে ওই অনুচ্ছেদটি পোস্ট করে লেখা হয়, গবেষণায় দেখা গেছে চীনের উত্তরপশ্চিম জিনজিয়াং প্রদেশের জনসংখ্যার পরিবর্তন জনসংখ্যার সার্বিক উন্নতির কারণে ঘটেছে। তারুণ্যের বড় একটি সংখ্যা ব্যক্তিগত উন্নয়নের ওপর বেশি সময় অতিবাহিত করছে।
গত বছর চীনা গবেষক আদ্রিয়ান জেনজের একটি গবেষণায় বলা হয়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শিনজিয়াংয়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নাটকীয়ভাবে কমে এসেছে। ২০১৫ ও ২০১৮ সালের মধ্যে উইঘুরদের দুটি অঞ্চলে জন্মহার ৮৪ শতাংশ কমেছে। ২০১৯ সালে এই হার আরও কমেছে। চীন উইঘুর মুসলিমদের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে মুসলিম নারীদের দেহে জোর করে জন্মনিয়ন্ত্রণকারী যন্ত্র বসানো বা বন্ধ্যা করানোর কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আন্তর্জাতিক মহল এই ঘটনার তদন্ত করতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানায়। চীন অবশ্য এই রিপোর্টের দাবিগুলোকে ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করে।